Рет қаралды 123,250
পরলোকের প্রতি আমাদের আকর্ষণ অমোঘ। মৃত্যুর পরে যে অখন্ড অতল অন্ধকার, তাকে জানতে তাই আমাদের কৌতূহলের অন্ত নেই। কৌতূহলের সঙ্গে মিশে গেছে কল্পনা, বিভ্রান্তি এবং অনেকখানি 'ভয়'।
আর সেই ভয়কে জয় করতে সেকালের জাপানিরা একটা আশ্চর্য খেলা শুরু করেছিলেন। খেলাটার নাম 'হায়াকুমনোগতারি কাইদান-কাই'। শুদ্ধ বাংলায় যার মানে করলে দাঁড়ায়, 'একশোখানি উদ্ভট কাহিনীর সমষ্টি'।
খেলাটা আসলে শুরু করেছিলেন সামুরাইরা। পথচলতি অচেনা যোদ্ধারা তাদের যাত্রাপথে যখনই একে অপরের সঙ্গে বসে দুটি সুখ-দুঃখের কথা বলার অবকাশ পেতেন তখনই এই খেলাটায় মজতেন।
খেলার নিয়ম খুব সহজ সরল। খেলার সময় - রাতের অন্ধকার। খেলোয়াড়ের সংখ্যা হতে পারে এক থেকে একশো'র মধ্যে যে কোনও একটি। একশো খানা মোমবাতি জ্বালিয়ে শুরু হবে খেলা।
জ্বলন্ত মোমবাতিগুলোকে ঘিরে বৃত্তাকারে বসবেন খেলোয়াড়রা। একে একে তারা শোনাবেন তাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে থাকা সবচাইতে ভয়ানক গল্পটি।
প্রতিটি গল্পের শেষে কথক নিভিয়ে দেবেন একটি করে মোমবাতির শিখা। এভাবেই যখন শেষ মোমবাতিটা নিভে যাবে, নিকষ অন্ধাকরে ঢেকে যাবে চরাচর, ঠিক তখনই নাকি অন্ধকার ফুঁড়ে বেরিয়ে আসবে এক অলৌকিক প্রাণী।
খেলাটা জাপান জুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সামুরাইদের হাত ধরে গল্প বলার এই অনবদ্য রীতি ঢুকে পড়েছিল সাধারণ মানুষদের ঘর-গেরস্থালীতেও। মুখে মুখে ঘুরে ঘুরে ওই গল্পগুলো একদিন সময়ের ঘূর্ণিঝড় এড়িয়ে ভেসে গেল কাল কালান্তরে। অমর হয়ে রইল অসংখ্য 'কাইদান' অর্থাৎ 'ভূতের গল্প'।
এইরকমই জাপানের তিনটি সুবিখ্যাত ভৌতিক কাহিনী 'নিহন স্যান দাই কাইদান'- তিন কাহিনীরই মূল চরিত্র তিন নারী। ওকিকু, ওৎসুয়ু এবং ওইওয়া। আজ শুনবেন ওকিকুর কাহিনী। আসুন, এবার ডুব দেওয়া যাক কাহিনীতে।
আজকের গল্পপাঠে : সায়ক আমান
ওকিকুর চরিত্রে : অনন্যা
নবুর চরিত্রে : তমাল
হিকারি ও টেসান আয়োমার চরিত্রে: দেবদত্ত
টেসানের স্ত্রীর চরিত্রে : পূজা
সম্পাদনায় : সায়ন
প্রচ্ছদ: কৃষ্ণেন্দু
প্রযোজনা ও পরিবেশনায় : বিভা পাবলিকেশন
ওকিকু অভাগিনী। সরলমতি সুন্দরী মেয়েটির বিশ্বাসের দাম কেউ দেয়নি। তাই বোধহয় তার দুঃখে শ্রোতাদের মন কাঁদে সবচাইতে বেশি। গল্পটি এতটাই বিখ্যাত যে পাশ্চাত্যেও তার কাহিনী পৌঁছে গেছে প্রশান্ত মহাসাগরের ভেজা বাতাসের কাঁধে চেপে। সেখানকার মানুষ অজান্তেই আপন করে নিয়েছেন তাকে। 'অজান্তে' বললাম এই কারণে, মানুষ ওকিকুকে এখন সম্পূর্ণ অন্য নাম চেনে। কি নাম বলুন তো?
সামারা।
মনে পড়ছে? ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'দ্য রিং' নামের সিনেমাটি যদি দেখে থাকেন তাহলে তাকে চিনতে অসুবিধা হবার কথা নয় আসলে। কুঁয়োর মধ্যে থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসা মেয়েটিকে অনেক হরর-প্রেমী এখনও ভুলতে পারেন না। ওই মেয়েটির চরিত্র অনেকটাই তৈরী আমাদের এই গল্পের নায়িকা ওকিকুর আদলে।
এবার আসা যাক মূল গল্পের দিকে। অবশ্য মূল গল্পের 'মূল' খুঁজবেনই বা কি করে? গল্পটা এতটাই পুরোনো যে তার সৃষ্টিকাল এবং স্রষ্টার নাম খুঁজে পাওয়া দুস্কর। লেখায় অবশ্য ওকিকুর আত্মপ্রকাশ ১৭৪১ সালের একটি নাটিকায়, যার নাম, Banchō Sarayashiki (The Dish Mansion at Banchō)
গল্পে উল্লিখিত দূর্গের নাম বারে বারে পাল্টে গেলেও অধিকাংশ গল্পেই সে 'হিমেজি কাসল'’- শুধু তাই নয়, হিমেজি দূর্গে আজও সেই কুঁয়োটাকে নাকি সংরক্ষণ করে রাখা আছে। সত্যি মিথ্যা নিয়ে গবেষকরা ব্যস্ত হবেন, তবে আমাদের মত শ্রোতাদের কাছে ওকিকু'র কাহিনী বেঁচে থাকবে তার সারল্য আর মরমী ব্যাখ্যানের জোরেই।
#Biva_Cafe #Horror_Audio_Story #Japanes_Ghost