Рет қаралды 301
কাজে ফোকাস কীভাবে বাড়াবেন: কামরান চৌধুরী How to increase focus at work : মনোযোগ বৃদ্ধি।। মনোসংযোগ।
কাজে ফোকাস বৃদ্ধির উপায়
মানবমস্তিষ্ক ভীষণ জটিল। এই মস্তিষ্ক মানুষকে চাঁদে নিয়ে গেছে, পিরামিড তৈরি করেছে, জটিল রোগের ঔষধ তৈরি করেছে...আবার সেই মস্তিষ্ক পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পরপর ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রামে ঢুঁ মারতেও বলছে। মনোযোগ ধরে রাখা যাচ্ছে না কোনোভাবেই। ‘সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ফলে’মানুষের মনোযোগ বিয়োগ নিয়ে সবার উদ্বিগ্নতা বেড়ে গেছে হাজার গুণ; বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তা প্রকট। এই মনোযোগ বাড়াতে কী করা যায়? সে বিষয় নিয়ে আজকের এই ভিডিওতে কিছু কথা বলবো।
নতুন কিছু শিখতে, লক্ষ্য অর্জন করতে ও বিভিন্ন পরিবেশে ভালো করার জন্য মেন্টাল ফোকাস বা মনোনিবেশের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে মানসিক প্রচেষ্টায় ঘাটতি থাকলে চলবে না। কিন্তু ফোকাস ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশের গুরুত্ব একটু বেশি- কারণ আর যাই হোক না কেন, বিক্ষিপ্ত মন দিয়ে সৃজনশীলতা হয় না। একজন মানুষের মেন্টাল ফোকাস অথবা মনোনিবেশের ক্ষমতার মাত্রার ওপর সফলতা অথবা ব্যর্থতা বহুলাংশে নির্ভর করে।
ফোকাস হচ্ছে মেন্টাল মাসলের মতো- আপনি এটিকে যত বেশি গঠনের চেষ্টা করবেন, এটি তত বেশি শক্তিশালী হবে। মেন্টাল ফোকাস বাড়ানো যায়, কিন্তু তার মানে এটা নয় যে আপনি খুব দ্রুত বা সহজেই এটা করতে পারবেন। মেন্টাল ফোকাস বা মনোনিবেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে কিছু বড় পরিবর্তন আনতে হবে।
কাজে ফোকাস ধরে রাখতে এই বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন:
১. একসাথে একাধিক কাজ করলে দক্ষতা বাড়ে না বরং কমে। বাস্তবে, মাল্টিটাস্কিংয়ের ফলে প্রতিটি কাজেরই মান কমে যায় এবং ভুল করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
২. কাজ শুরু করার আগে নিজেকে একটা সময়সীমা দিন এবং সেই সময়ের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ রাখুন।
৩. কাজের মাঝে বিরতি নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। তবে, খুব বেশি বা ঘন ঘন বিরতি নিলে কাজের গতি কমিয়ে দিতে পারে। এজন্য বিরতির একটি সময়সূচি তৈরি করুন এবং সেই মতো বিরতি নিন।
৪. প্রতিদিন ৬-৭ ঘন্টা ঘুমের চেষ্টা করুন।
৫. স্পষ্ট লক্ষ্য না থাকলে, কাজে ফোকাস ধরে রাখা কঠিন। আপনার কাজের জন্য দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং মাসিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।
কাজে ফোকাস ধরে রাখতে করণীয় বিষয়গুলো হলো-
১. কাজের পরিবেশ শান্ত, পরিচ্ছন্ন এবং বিভ্রান্তিমুক্ত হওয়া উচিত। আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছু হাতের কাছে রাখুন । আপনি যদি আপনার বাড়িতে কাজ করেন, তাহলে একটি নির্দিষ্ট জায়গাকে আপনার কাজের জায়গা হিসেবে নির্ধারণ করুন।
২. আপনার কাজের জন্য নিজেকে সময়সীমা দিন এবং টাইমার ব্যবহার করুন। এতে কাজটি করার প্রতি যেমন আগ্রহ সৃষ্টি হয়, তেমনি নিজের মধ্যে এক প্রকার দায়িত্ববোধও কাজ করে। এটি আপনাকে আপনার কাজে ফোকাস করতে সাহায্য করবে এবং কাজ শেষ করার জন্য আপনাকে উৎসাহিত করবে।
৩. কাজের তালিকা তৈরি করুন- যেকোন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে টু-ডু লিস্ট তৈরি করা জরুরী। আপনার প্রতিদিনের কাজটি একটি টু-ডু লিস্টের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রতিটি কাজ সেই লিস্ট অনুযায়ী করুন। তাহলে আপনার কোন কাজ বাদ পড়বে না এবং সময়মত হবে। ফোকাস ঠিক থাকবে, ।
৩. একটানা দীর্ঘ সময় কাজ করলে আপনার মনোযোগ বিভ্রান্ত হয়, কাজে অনাগ্রহ আসে। তাই, কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছোট ছোট বিরতি নিন। এই বিরতিগুলোতে আপনি কিছুটা হাঁটাচলা করতে পারেন, কিছুটা পানি খেতে পারেন, গান শুনুন কিংবা সহপাঠী বা সহকর্মীর সঙ্গে আড্ডা দিন, মন খুলে কথা বলুন।
৪. আপনার কাজে ফোকাস ধরে রাখার জন্য আপনার স্পষ্ট লক্ষ্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি কি কাজ করতে চান? এই কাজগুলো শেষ করার জন্য আপনার কি কি করতে হবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার কাছে পরিষ্কার থাকলে আপনি আপনার কাজে আরও বেশি ফোকাস করতে পারবেন।
৫. যেকোনো কাজ শুরু করার আগে নিজের মস্তিস্ককে প্রস্তুত করে নিন। কাজটি কীভাবে করবেন? কিভাবে কাজটি করলে ভালো হবে? ভাবুন। গভীরভাবে কয়েকবার নিঃশ্বাস নিন, নিঃশ্বাস ছাড়ুন। আপনার শরীর ও মনকে এভাবেই কাজ শুরু করার পূর্বে শান্ত করে নিন।
৫.আপনার কাজগুলোর মধ্যে কোনগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ? এই কাজগুলো আগে শেষ করুন।
সহজ দিয়ে শুরু- যেকোনো কাজের বেলায়, বিশেষ করে পড়াশোনার সময় সহজ বিষয় দিয়ে শুরু করুন। একটা গতি চলে এলে কঠিন বিষয়েও মনোযোগ দেওয়া সহজ হয়ে যাবে।
৬. কাজ শেষ করার পর কিছুটা বিনোদন গ্রহণ করুন। এতে আপনার মনোযোগ ফোকাস করা সহজ হবে।
৭. পর্যাপ্ত ঘুম -প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুম নিন।
৮. পুষ্টিকর খাবার খাওয়া আপনার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তাই, আপনার খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল এবং শস্য রাখুন।
৯. ব্যায়াম আপনার মনোযোগ বাড়াতে এবং কাজে ফোকাস ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
১০. ধ্যান আপনার মনকে শান্ত করতে এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই, প্রতিদিন কিছু সময় ধ্যান করার চেষ্টা করুন।
১১. গান আমাদের মস্তিষ্ককে শান্ত ও স্থির রাখতে সাহায্য করে। মনোমুগ্ধকর সুর যান্ত্রিক কলহ থেকে মনকে প্রশান্তি দেয়। কাজেই ফোকাস ধরে রাখতে গান অত্যন্ত চমৎকারভাবে কাজ করে।
১২. নিজেকে মোটিভেট করুন- নিজেকে একটু সময় দিন, সেলফ মোটিভেশন-ই পারে যেকোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার অনুপ্রেরণা যোগাতে। আমি পারি, আমাকে এই কাজটা নিখুঁতভাবে শেষ করতে হবে’এই বিষয়টা মনে গেঁথে নিন। মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করতে তখন আর অসুবিধা হবে না!
১৩) খাবার খেয়ে কাজে বসবেন, পেটে ক্ষুধা থাকলে কখনোই কোনো কাজে মনোনিবেশ করা যায় না। কাজের মধ্যে ব্রেক নিয়ে নাস্তা করে নিতে পারেন। চা-কফি, ফ্রেশ জুস, বাদাম, কুকিজ এগুলো কাজের ফাঁকে খেতে পারেন। এতে এনার্জি পাবেন, মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করতেও সুবিধা হবে।
১৪. কাজের মধ্যে অন্য কিছু করার কথা মনে পড়ে গেলে খাতায় লিখে রাখুন। খুব জরুরি না হলে তখনই করতে যাবেন না। কারণ আপনার হাতের কাজ শেষেও অন্য কাজটি করতে পারবেন। কোন মানসিক চাপ থাকলে সেটা সমাধানের চেষ্টা করুন। সমাধান না হলে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
১৫. প্রকৃতির কাছে যান