......... বেশ ভালো কিছু অনুভব করলো ' মন '......!🙏 ........ এমন লেখার বিকল্প নেই ! অসংখ্য ধন্যবাদ এমন লেখা , পড়ার জন্য , সার্থক তুমিও......👌 .......... ভালো থেকো...👌❤️🙏

" বাংলার প্রান "......." চির - অমর " ..…… বাঙালী র মাতৃভাষার প্রকৃত রুপকার , সারা দুনিয়াতে " বাংলা ভাষার " সম্মান সবার উদ্ধে তুলেছেন ,সবার প্রথম কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর..... নতুবা...... ! আন্তরিক শ্রদ্ধা ও প্রনাম জানাই এক বাঙালি মহাপুরুষ - শিল্পী কে...🙏

অনবদ্য তথ্যপন্জি।

Salutations to Rabindranath Tagore🙏🙏🙏 Thanks to your appropriate choice & impressive presentation, we (the subscribers of 'Bangla Shera Golpo') today got the opportunity of listening to the audio recording of a brilliant essay which Buddhadev Bose did pen in 1941.💖💖💖

A few lines from this particular essay: [Set-2] 3...তাঁর একটি মহৎ গুণ এই যে যখন যাকে কাছে ডাকেন তার প্রতি সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেন, কারো উপস্থিতিতে উন্মনা কি উদাসীন ভাব তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ। হয়তো অনেক সময় দু-চার মিনিটেই কথা শেষ করেন, কিন্তু সেই অল্প সময়েই একটি সরস পরিপূর্ণতার স্বাদ আসে- তিনি যে মস্ত একজন কাজের লোক, তাঁর সময় যে মহামূল্য এ-ভাবটা তাঁর মধ্যে কখনোই ফোটে না। অন্নদাশঙ্কর একবার লিখেছিলেন যে রবীন্দ্রনাথের কাছে যখনই যাওয়া যায় তখনই মনে হয় তাঁর অফুরন্ত সময়, কোনো কাজই তাঁর নেই। খুব সত্য এ-কথা। ব্যস্ততার ভাব তাঁর স্বভাবে একেবারেই নেই, তাড়াহুড়োর খ্যাপামি কখনো তাঁকে ছোঁয় না; অন্তহীন কাজ নিয়ে অন্তহীন ছুটির মধ্যে তিনি ব'সে আছেন। যখনই যার সঙ্গে কথা বলেন মনে হয় ঠিক ঐ লোকটির সঙ্গে কথা বলা ছাড়া আর-কোনো কাজই নেই তাঁর। তাঁর তুলনায় অতি সামান্য অতি তুচ্ছ কাজ যাঁরা করেন তাঁরাও ব্যস্ততার ঠেলায় নিজেরাও হাঁপিয়ে ওঠেন, অন্যদেরও হাঁপ ধরান; যে-রকম শুনি তাতে বোঝা যায় যে য়োরোপের ক্ষুদ্র লেখকদেরও সাক্ষাৎ পেতে হ'লে বিস্তর বেগ পেতে হয়---এদিকে রবীন্দ্রনাথকে ঘিরে রয়েছে একটি অকুণ্ঠিত মুক্তি, তাঁর দুয়ার সব সময়েই খোলা। 4....শরীর যত বড়োই শত্রুতা করুক, রচনায় কোনোরকম অপরিচ্ছন্নতা তিনি সইতে পারেন না; ছোটোদের নাম ক'রে গদ্যে-পদ্যে 'গল্পসল্প লিখেছেন, তাও হয়েছে উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম। 5...রবীন্দ্রনাথের বইয়ের সমালোচনায় একটা সুর আজকাল প্রায়ই ধরা পড়ে 'বুড়ো হয়েছেন, শরীর ভালো নেই, কী আর লিখবেন -যা লিখছেন এই ঢের।' এই পিঠ-চাপড়ানো ভাবটায় তাঁর রচনার প্রতি শুধু নয়, তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রতিও ঘোর অবিচার করা হয়।

A few lines from this particular essay: [Set-3] 6....আজকের দিনে নিজের প্রতিষ্ঠাকে তিনি গৃহীত ও অনশ্বর সত্য ব'লে ধ'রে নেন না, প্রতিটি নতুন রচনার পিছনে থাকে নতুন লেখকের উৎসাহ; প্রতি বারেই তাঁর নতুন জন্ম ব'লে প্রতি বারেই তাঁর নতুন প্রতিষ্ঠার দাবি। 'হে নূতন, দেখা দিক আর বাব জন্মের প্রথম শুভক্ষণ' তাঁর এই নবতম বাণী শুধু কথার কথা নয়, ওতে আছে তাঁর সাহিত্যিক জীবনের মূল সত্য। সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে এই যে 'আমার যা হবার হ'য়ে গেছে' এ-ভাবটি কখনো তাঁর মনে এলো না। এ-জন্যেই এত লিখেও তিনি পুরোনো হলেন না, এত দিনেও তিনি ফুরিয়ে গেলেন না।তাঁর লেখা--রবীন্দ্রনাথের লেখা ব'লে নয়---যে-কোনো লেখকের রচনা হিশেবেই দেশের লোকের মনে লেগেছে কিনা সে-বিষয়ে এখন তিনি অনুসন্ধানী। পাঠকদের তিনি বলেন-- আর-কিছু দেখো না, কে লিখেছে, তার বয়স কত, উপজীবিকা কী, সে কোন সমাজের লোক, ও-সব ভুলে যাও, লেখাটা দ্যাখো। অন্য সব বাদ দিয়ে লেখাটাই যদি ভালো লাগে, সেই ভালো লাগাটাই খাঁটি। তাঁর কোনো লেখা কারো ভালো লেগেছে শুনলে তিনি খুশিও হন, যদি সেই ভালো-বলা নেহাৎই খুশি করার জন্য না হয়। কথার মারপ্যাঁচে তাঁকে ফাঁকি দেয়া অসম্ভব, আন্তরিক অনুভূতির যেখানে অভাব তিনি সহজেই ধ'রে ফেলেন। সে-অভাব সমালোচকেরা প্রায়ই পূরণ করার চেষ্টা করেন যুক্তিতর্ক দিয়ে, রবীন্দ্রনাথ জানেন কতটুকু তার মূল্য। ভালো লেগেছে, এই কথাটি ঠিকমতো বলতে পারাই তাঁর মতে যথার্থ সমালোচনা, এর বেশি আর-কোনো কথা নেই। কিন্তু ঠিক-মতো বলা শক্ত। তার জন্য শিক্ষা চাই, চাই অভিজ্ঞতা, শিল্পবোধ। সেটা পাণ্ডিত্য নয়, সেটা অনুভূতিরই শিক্ষা, আলোচ্য শিল্পে প্রত্যক্ষ গভীর অভিজ্ঞতা। তারই জোরে ভালো লেগেছে কথাটা বলবার মতো হয়, শোনবার মতো হয়। এ-কথাটা যেখানে ভালো ক'রে বলা হয় সেখানেই তাঁর মন মেনে নিতে পারে, সমালোচনার অন্যান্য পদ্ধতিতে তাঁর আস্থা নেই। তাঁর সাহিত্য কি ছবির আলোচনায় চুলচেরা বিশ্লেষণ তিনি চান না, ঐতিহাসিক সামাজিক পটভূমিকার বর্ণনাও না, নিছক স্তুতির শূন্যতা তাঁকে পীড়িত করে, তিনি শুধু খোঁজেন বিশুদ্ধ উপভোগের প্রাণবন্ত পরিচয়। তিনি জানেন ভালো-লাগানোটা কত কঠিন কাজ, তার চেয়ে বড়ো কীর্তি শিল্পীর কিছু নেই, আর শিল্পের শেষ যাচাই সেখানেই। 7. বিশ্বের বৃত তিনি, কিন্তু তাঁর বিশ্বব্যাপী যশ তাঁর মনে মোহ আনে নি। তিনি জানেন কবির প্রকৃত আসন তাঁর স্বদেশ, যদি সে-দেশ মূঢ়ের দেশ হয়, তবুও ওর মধ্যে যে বিশ্ববিজয়ী জাদু আছে ধরা পড়ুক তার রহস্য, মূঢ়ের দেশে নয়, যে দেশে আছে সমজদার, আছে দরদী, আছে ইংরেজ জর্মান ফরাসী। এ-কথা পরোক্ষে তাঁর নিজেরই কথা। স্বদেশের কথা, স্বজাতির কথা উঠলে তাঁর কথার সুর বদলে যায়, এই ঈর্ষাকাতর ক্ষুদ্রস্বার্থমগ্ন আত্মবিভক্ত বাঙালি জাতি নিয়ে তীব্র বেদনাবোধ তাঁর মনে চাপা আগুনের মতো জ্বলছে। অথচ সাহিত্যক্ষেত্রে বাঙালির কৃতিত্বের কথা বলতে তাঁর মুখ উজ্জ্বল হ'য়ে ওঠে। ইংরেজ এ-দেশে এলো যে-নবীন সংস্কৃতির বাহন হ'য়ে তার সংঘাতে এত বড়ো ভারতবর্ষের মধ্যে এক বাংলাদেশেই এলো সাহিত্যবন্যা, তার কারণ, রবীন্দ্রনাথ বলেন, বাংলাদেশে ক্ষেত্র প্রস্তুত ছিলো, 'ইংরেজের বদলে ফরাশি হ'লে আমরা সবাই মোপাসাঁ হ'য়ে উঠতুম।' অর্থাৎ, প্রমথ চৌধুরীর ভাষায় বলতে গেলে, এটা ইংরেজের জন্য হয়েছে, কিন্তু ইংরেজের জন্যই হয় নি। এ-নবজীবন আমাদের মধ্যে আসতোই, ইংরেজ উপলক্ষ মাত্র। পাশ্চাত্ত্য প্রেরণা ভারতের অন্যান্য প্রদেশে অন্যান্য বিষয় জাগিয়েছে---কোথাও আইন, কোথাও গণিত, কোথাও বাণিজ্য, কিন্তু সাহিত্যের বিকাশ হ'লো বাংলাদেশে। তারই প্রভাবে বাঙালি তার মাতৃভাষাকে ভালোবাসতে শিখেছে, তার দেশপ্রেমেরও একটি প্রধান অঙ্গ মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ।

A few lines from this particular essay: [Set-4] 8... কবি প্রকাশিত হন তাঁর মাতৃভাষায়, তাঁর প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রও তাই শেষ পর্যন্ত তাঁর স্বদেশ, তাঁর ভাষায় যারা কথা বলে তাদের মধ্যে। জগৎ-জোড়া খ্যাতি নিয়েও রবীন্দ্রনাথ আজ জানতে চান তাঁর নিজের দেশকে সত্যি তিনি কিছু দিতে পেরেছেন কিনা। বাংলাদেশ যিনি সৃষ্টি করলেন, তাঁর মনে প্রশ্ন জাগে বাংলাদেশ তাঁকে গ্রহণ করেছে তো? তিনি যে ব্যর্থ হন নি এই কথাটি শুনে যেতে চান। তাঁর এবারের জন্মদিনে যত অভিনন্দন তাঁর উপর বর্ষিত হ'লো তাতে তিনি এইটুকু দেখতে পেলেন যে দেশ তাঁকে গ্রহণ করেছে। 'তোমরা দুয়ো দাও নি আমাকে---আমাদের দেশে তা-ই দেয়।' 9...কোনো প্রশ্নেই তিনি নিরুত্তর নন, কোনো প্রসঙ্গেই অনিচ্ছুক নন। তিনি সর্বদাই প্রস্তুত: একদিকে যেমন তাঁকে ঘিরে আছে অফুরন্ত ছুটি, তেমনি আবার তাঁর মনের কারখানা-ঘরে ছুটির লাল তারিখ কখনো ছিলো না, এখনো নেই।

A few lines from this particular essay: [Set-1] 1....বর্নার্ড শ একবার এলেন টেরির জন্মদিনে একটি পদ্য লেখেন, তাঁর বলবার কথাটা ছিলো এইরকম যে এ কী আশ্চর্য কাণ্ড যে বছর-বছর আমাদের বয়স ঝড়ে আর এলেনের বয়স ক'মে যায়! বয়স যত বেড়েছে রবীন্দ্রনাথ ততই সুন্দর হয়েছেন এ-কথা তাঁর বিভিন্ন বয়সের ছবি ধারাবাহিকভাবে দেখলেই বোঝা যাবে। কিছুদিন আগেও তাঁর মুখে তাঁর একটি উজ্জ্বলতা ছিলো, চোখ যেন ধাঁধিয়ে যেতো, বিরাট সভার মধ্যেও অন্য প্রত্যেকটি মুখ তুলনায় মনে হ'তো ম্লান। সে-ও সুন্দর, কিন্তু আজ তাঁর শীর্ণ মুখে যে-সন্ধ্যারাগের কমনীয়তা দেখা দিয়েছে, দৃষ্টিতে ফুটেছে যে-সকরুণ আভা, সৌন্দর্যের এ-ই বোধ হয় চরম পরিণতি। 2... তাঁকে দেখে, তাঁর কথা শুনে যখন বেরিয়ে আসতুম, রোজই নতুন ক'রে মনে হ'তো যে সমস্ত জীবন ধন্য হ'য়ে গেলো। তাঁর কথা যেন বর্ণাঢ্য গীতিনিস্বন, যেন সুরস্রাবী ইন্দ্রধনু। তা যেমন শ্রুতিসুখকর তেমনি মনোবিমোহন। বাংলা ভাষার উপর তাঁর প্রভুত্ব যে কী বিরাট তা তাঁর মুখের কথা না-শুনলে ঠিক ধারণা করা যায় না। তিনি কথা বলেন হুবহু তাঁর শেষের দিককার গদ্য বইগুলোর মতো, অতি সাধারণ কথাকেও অসাধারণ ক'রে বলবার ক্ষমতায় তাঁর গল্পের সকল পাত্রপাত্রীকে তিনি হার মানান, উপমা রূপক থেকে-থেকে ফুটে উঠছে, হঠাৎ অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত মুহূর্তে ঝিলিক দিচ্ছে কৌতুক! তাঁর নিটোল, সুন্দর, স্বর্ণঝংকৃত কণ্ঠস্বর, আর তাঁর উচ্চারণের স্পষ্ট, দৃঢ় অথচ ললিত ভঙ্গির সঙ্গে সকলেই তো পরিচিত, তাঁর মুখে শুনলে বাংলাকে অনেক বেশি জোরালো ও মধুর ভাষা ব'লে মনে হয়। তাঁর অভ্যর্থনার মধুরতা ও আলাপের আন্তরিকতা ভোলবার নয়।